Dhaka ১১:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
‘আলোকিত মানুষ গড়ার’ আন্দোলনে নতুন অধ্যায়

শ্রীমঙ্গলে চারদিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ

  • বাপ্পী দেব
  • আপডেটের সময়: ০৬:১১:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
  • ২০২ নিউজ ভিউ

‘আলোকিত মানুষ গড়ার’ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের চারদিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব সমাপ্ত হয়েছে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর ২০২৫) বিকাল ৫টায় শ্রীমঙ্গলের উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত আবৃত্তি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ মেলার সমাপ্তি হয়।

এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে সমাপনী বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সংগঠক, ইংরেজি দৈনিক দ্য ফিনান্সিয়াল পোস্ট এবং সাপ্তাহিক নতুন কথা–এর বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজ-এর সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান। তিনি আশাবাদী মানুষ। আর তাই তিনি বলেন, “ভ্রাম্যমাণ বইমেলা জ্ঞানপিপাসু মানুষদের তীর্থক্ষেত্র। শ্রীমঙ্গলের এই ভ্রাম্যমাণ বইমেলাও ওই মানুষদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।” আর এতে আলোকিত মানুষ গড়ার আন্দোলন আরও বেগবান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে আলোকিত মানবতার বার্তা

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আয়োজনে ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় শ্রীমঙ্গল উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪ দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসবের সমাপনী দিনে চিত্রাঙ্কন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সংগঠক, ইংরেজি দৈনিক দ্য ফিনান্সিয়াল পোস্ট এবং সাপ্তাহিক নতুন কথা–এর বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজ-এর সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন চারুকলার শিক্ষক পার্থ দেব; বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ বইমেলার ইউনিট ইনচার্জ অমিত চক্রবর্তী প্রমূখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দ্বারিকাপাল মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক জলি পাল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আবৃত্তিকার ও লেখক বিকাশ দাশ বাপ্পন। অনুষ্ঠানে প্রতিযোগী ও ক্রেতা-দর্শনার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। মাঠ পর্যায়ে মেলা আয়োজনে সহযোগী মেটলাইফ ফাউন্ডেশন। স্থানীয় পর্যায়ে মেলা আয়োজনে সহযোগিতা করেছে উপজেলা প্রশাসন, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার।

শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংস্কৃতিসেবীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানের পুরো প্রাঙ্গণ উৎসবের আমেজে মুখরিত হয়ে ওঠে।

সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতায় আয়োজন

সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সহযোগিতা এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহায়তায় আয়োজিত এই ভ্রাম্যমাণ বইমেলা চলে ১৫ থেকে ১৮ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত।
প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। মাঠ পর্যায়ে মেলা আয়োজনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান মেটলাইফ ফাউন্ডেশন।

“ভ্রাম্যমাণ বইমেলা কর্মসূচি”— পাঠের আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়ার এক উদ্যোগ

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইউনিট ইনচার্জ অমিত চক্রবর্তী বলেন, “দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাঠপ্রেমী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের হাতে সহজলভ্যভাবে বিশ্বসেরা বই পৌঁছে দিতে আমরা ‘ভ্রাম্যমাণ বইমেলা কর্মসূচি’ চালু করেছি। এটি আমাদের ‘আলোকিত মানুষ গড়ার’ মূল কর্মযজ্ঞেরই অংশ।”

তিনি আরও জানান, মেলায় রয়েছে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা, ইতিহাস-ঐতিহ্যভিত্তিক রচনা, অনুবাদ সাহিত্য, বিজ্ঞান কল্পকাহিনি, রূপকথা এবং শিশু-কিশোরদের জন্য বাছাইকৃত বইয়ের সমাহার।
পাঠপ্রেমীদের উৎসাহিত করতে প্রতিটি বইয়ে থাকছে বিশেষ মূল্যছাড়।

“জ্ঞান, মনন ও সৃজনশীলতার উজ্জ্বল যাত্রা”— কমরেড আমিরুজ্জামান

এ মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট কলামিস্ট ও গবেষক কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “আলোকিত মানুষ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ সত্তরের দশকের শেষভাগে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। ৪৬ বছরের এই যাত্রায় কেন্দ্রটি জ্ঞান, মনন ও সৃজনশীলতার এক আলোকিত অঙ্গনে পরিণত হয়েছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র কোনো গৎবাঁধা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়; এটি অনুসন্ধিৎসু, সৌন্দর্যপ্রবণ ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ গড়ার এক কর্মশালা। বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা ও রুচিশীল সংস্কৃতির বিকাশই এর উদ্দেশ্য।”

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন— “শ্রীমঙ্গলের এই ভ্রাম্যমাণ বইমেলা জ্ঞানপিপাসু মানুষদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে, আর এতে আলোকিত মানুষ গড়ার আন্দোলন আরও বেগবান হবে নিশ্চয়।”

শ্রীমঙ্গলে পাঠপ্রেমীদের মিলনমেলা

মেলা ঘিরে শ্রীমঙ্গলজুড়ে বই ও পাঠের এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় তরুণ-তরুণী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংস্কৃতিপ্রেমীরা দলে দলে মেলায় ভিড় করেছেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দলগতভাবে অংশগ্রহণ করেছে পাঠচক্র ও আলোচনায়।

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, এই ধরনের উদ্যোগ তরুণদের মধ্যে পাঠের আগ্রহ বাড়িয়েছে, বইয়ের সঙ্গে তাদের গভীর সম্পর্ক তৈরি করছে এবং মননশীল প্রজন্ম গঠনে ভূমিকা রাখবে।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র : জ্ঞানের আলোকবর্তিকা

১৯৭৮ সালে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ-এর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র চার দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের তরুণ প্রজন্মের মাঝে বইপড়ার অভ্যাস, প্রজ্ঞামূলক চিন্তা ও মানবিক মূল্যবোধ বিস্তারে কাজ করে যাচ্ছে।
বর্তমানে এর পাঠচক্র, লাইব্রেরি ও মোবাইল লাইব্রেরি কর্মসূচি সারাদেশে বিস্তৃত।

সফল সমাপ্তি

শনিবার (১৮ অক্টোবর) শ্রীমঙ্গলের উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই বইমেলার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হয়।
চারদিনব্যাপী এই আয়োজন শুধু বই বিক্রির মেলা নয়; এটি এক আলোকিত সমাজ গড়ার অনুপ্রেরণার উৎসব— যেখানে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত মানুষ গড়ার স্বপ্ন বুনছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র।

Author

ট্যাগ :
জনপ্রিয় খবর
.copy_right_section { display: none; }

‘আলোকিত মানুষ গড়ার’ আন্দোলনে নতুন অধ্যায়

শ্রীমঙ্গলে চারদিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ

আপডেটের সময়: ০৬:১১:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

‘আলোকিত মানুষ গড়ার’ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের চারদিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব সমাপ্ত হয়েছে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর ২০২৫) বিকাল ৫টায় শ্রীমঙ্গলের উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত আবৃত্তি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ মেলার সমাপ্তি হয়।

এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে সমাপনী বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সংগঠক, ইংরেজি দৈনিক দ্য ফিনান্সিয়াল পোস্ট এবং সাপ্তাহিক নতুন কথা–এর বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজ-এর সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান। তিনি আশাবাদী মানুষ। আর তাই তিনি বলেন, “ভ্রাম্যমাণ বইমেলা জ্ঞানপিপাসু মানুষদের তীর্থক্ষেত্র। শ্রীমঙ্গলের এই ভ্রাম্যমাণ বইমেলাও ওই মানুষদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।” আর এতে আলোকিত মানুষ গড়ার আন্দোলন আরও বেগবান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে আলোকিত মানবতার বার্তা

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আয়োজনে ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় শ্রীমঙ্গল উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪ দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসবের সমাপনী দিনে চিত্রাঙ্কন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সংগঠক, ইংরেজি দৈনিক দ্য ফিনান্সিয়াল পোস্ট এবং সাপ্তাহিক নতুন কথা–এর বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজ-এর সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন চারুকলার শিক্ষক পার্থ দেব; বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ বইমেলার ইউনিট ইনচার্জ অমিত চক্রবর্তী প্রমূখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দ্বারিকাপাল মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক জলি পাল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আবৃত্তিকার ও লেখক বিকাশ দাশ বাপ্পন। অনুষ্ঠানে প্রতিযোগী ও ক্রেতা-দর্শনার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। মাঠ পর্যায়ে মেলা আয়োজনে সহযোগী মেটলাইফ ফাউন্ডেশন। স্থানীয় পর্যায়ে মেলা আয়োজনে সহযোগিতা করেছে উপজেলা প্রশাসন, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার।

শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংস্কৃতিসেবীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানের পুরো প্রাঙ্গণ উৎসবের আমেজে মুখরিত হয়ে ওঠে।

সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতায় আয়োজন

সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সহযোগিতা এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহায়তায় আয়োজিত এই ভ্রাম্যমাণ বইমেলা চলে ১৫ থেকে ১৮ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত।
প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। মাঠ পর্যায়ে মেলা আয়োজনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান মেটলাইফ ফাউন্ডেশন।

“ভ্রাম্যমাণ বইমেলা কর্মসূচি”— পাঠের আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়ার এক উদ্যোগ

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইউনিট ইনচার্জ অমিত চক্রবর্তী বলেন, “দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাঠপ্রেমী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের হাতে সহজলভ্যভাবে বিশ্বসেরা বই পৌঁছে দিতে আমরা ‘ভ্রাম্যমাণ বইমেলা কর্মসূচি’ চালু করেছি। এটি আমাদের ‘আলোকিত মানুষ গড়ার’ মূল কর্মযজ্ঞেরই অংশ।”

তিনি আরও জানান, মেলায় রয়েছে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা, ইতিহাস-ঐতিহ্যভিত্তিক রচনা, অনুবাদ সাহিত্য, বিজ্ঞান কল্পকাহিনি, রূপকথা এবং শিশু-কিশোরদের জন্য বাছাইকৃত বইয়ের সমাহার।
পাঠপ্রেমীদের উৎসাহিত করতে প্রতিটি বইয়ে থাকছে বিশেষ মূল্যছাড়।

“জ্ঞান, মনন ও সৃজনশীলতার উজ্জ্বল যাত্রা”— কমরেড আমিরুজ্জামান

এ মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট কলামিস্ট ও গবেষক কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “আলোকিত মানুষ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ সত্তরের দশকের শেষভাগে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। ৪৬ বছরের এই যাত্রায় কেন্দ্রটি জ্ঞান, মনন ও সৃজনশীলতার এক আলোকিত অঙ্গনে পরিণত হয়েছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র কোনো গৎবাঁধা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়; এটি অনুসন্ধিৎসু, সৌন্দর্যপ্রবণ ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ গড়ার এক কর্মশালা। বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা ও রুচিশীল সংস্কৃতির বিকাশই এর উদ্দেশ্য।”

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন— “শ্রীমঙ্গলের এই ভ্রাম্যমাণ বইমেলা জ্ঞানপিপাসু মানুষদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে, আর এতে আলোকিত মানুষ গড়ার আন্দোলন আরও বেগবান হবে নিশ্চয়।”

শ্রীমঙ্গলে পাঠপ্রেমীদের মিলনমেলা

মেলা ঘিরে শ্রীমঙ্গলজুড়ে বই ও পাঠের এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় তরুণ-তরুণী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংস্কৃতিপ্রেমীরা দলে দলে মেলায় ভিড় করেছেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দলগতভাবে অংশগ্রহণ করেছে পাঠচক্র ও আলোচনায়।

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, এই ধরনের উদ্যোগ তরুণদের মধ্যে পাঠের আগ্রহ বাড়িয়েছে, বইয়ের সঙ্গে তাদের গভীর সম্পর্ক তৈরি করছে এবং মননশীল প্রজন্ম গঠনে ভূমিকা রাখবে।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র : জ্ঞানের আলোকবর্তিকা

১৯৭৮ সালে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ-এর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র চার দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের তরুণ প্রজন্মের মাঝে বইপড়ার অভ্যাস, প্রজ্ঞামূলক চিন্তা ও মানবিক মূল্যবোধ বিস্তারে কাজ করে যাচ্ছে।
বর্তমানে এর পাঠচক্র, লাইব্রেরি ও মোবাইল লাইব্রেরি কর্মসূচি সারাদেশে বিস্তৃত।

সফল সমাপ্তি

শনিবার (১৮ অক্টোবর) শ্রীমঙ্গলের উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই বইমেলার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হয়।
চারদিনব্যাপী এই আয়োজন শুধু বই বিক্রির মেলা নয়; এটি এক আলোকিত সমাজ গড়ার অনুপ্রেরণার উৎসব— যেখানে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত মানুষ গড়ার স্বপ্ন বুনছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র।

Author