পাঁচ বছর আগেও দৃশ্যটা ছিল ভিন্ন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতের আহমেদাবাদে বিশাল জনসভায় অংশ নিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সফর ছিল ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের উষ্ণতা ও বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রদর্শন। একই সময়ে চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে, লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হন, নিষিদ্ধ হয় টিকটকের মতো শতাধিক চীনা অ্যাপ। আর সীমান্তে ছিল টানটান উত্তেজনা।
কিন্তু দ্রুত বদলে যাচ্ছে ভূরাজনীতি। ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শুল্কযুদ্ধ, পাকিস্তানকে ঘিরে ওয়াশিংটনের ভূমিকা এবং আন্তর্জাতিক শক্তির পালাবদল ভারতকে নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। আর এই বাস্তবতায় দিল্লি-বেইজিং সম্পর্ক ক্রমেই স্বাভাবিক হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। Buy Cheap Replica Watches UK ‣ Cheapwatches.me
সাম্প্রতিক সপ্তাহে দিল্লিতে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। বৈঠকে উভয় পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থের প্রতি সম্মান ও স্থিতিশীল অগ্রগতির কথা তুলে ধরেছে। দীর্ঘ বিরতির পর ফের শুরু হচ্ছে সরাসরি ফ্লাইট, সহজতর ভিসা ও সীমান্ত বাণিজ্য। এমনকি তীর্থযাত্রীদের জন্য তিব্বত সফরের অনুমতিও দিয়েছে বেইজিং।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুই দেশ স্থিতিশীল উন্নয়নের পথে রয়েছে। উভয় পক্ষই আস্থা তৈরির পদক্ষেপ নিচ্ছে। সীমান্তের দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর আংশিক সমাধান নিয়েও আলোচনা চলছে।
এদিকে মোদি গ্রহণ করেছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণ, চলতি মাসের শেষে তিয়ানজিনে অনুষ্ঠেয় সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে। সাত বছরের বেশি সময় পর এটি হবে মোদির প্রথম চীন সফর। Cheap Rolex Fake Watches » Spot Best 2025 Rolex Replica
ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে, রাশিয়ার তেল আমদানি নিয়ে অতিরিক্ত শাস্তিমূলক শুল্ক বসিয়েছে। অথচ চীনের ক্ষেত্রে তুলনামূলক নরম অবস্থান নিয়েছে ওয়াশিংটন। ফলে ভারত বিকল্প বাজারের খোঁজে বেইজিংয়ের দিকে ঝুঁকছে।
ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি সবচেয়ে বেশি চীনের সঙ্গেই। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার। বিশেষ করে ইলেকট্রনিক পণ্য আমদানি এই ঘাটতি বাড়াচ্ছে। এখন চীন ভারতীয় পণ্যের জন্য বাজার উন্মুক্ত করার আশ্বাস দিচ্ছে। যা দিল্লির জন্য ট্রাম্প শুল্কের আঘাতের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠতে সহায়ক হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারত-চীন সম্পর্ক উষ্ণ হলে এশিয়ায় একটি নতুন বাণিজ্যধারা তৈরি হতে পারে। যা ওয়াশিংটনের প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ জানাবে। তাইওয়ান–এশিয়া এক্সচেঞ্জ ফাউন্ডেশনের গবেষক সানা হাশমি বলেন, চীনের কাছে এ উদ্যোগ কৌশলগত, আর ভারতের জন্য এটি অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে নেওয়া সিদ্ধান্ত। কিন্তু উভয়ের কাছেই এর ভূরাজনৈতিক মূল্য অপরিসীম। Perfect Replica Watches UK ‣ The Best Swiss Made 1:1 Replica Rolex Watches « Store
সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গবেষক ইভান লিদারেভের ভাষায়, চীন বুঝেছে, অতিরিক্ত চাপ ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঠেলে দিয়েছে। আবার ভারতও বুঝছে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তাকে বড় মূল্য দিতে হচ্ছে।
ভারতকে এত দিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ভারসাম্য রক্ষাকারী গণতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে দেখত। কোয়াডের (যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া) মাধ্যমে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরে প্রভাব বাড়ানো ছিল ওয়াশিংটনের লক্ষ্য। কিন্তু ভারত-চীন ঘনিষ্ঠ হলে এই কাঠামো নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বি আর দীপক বলেন, যদি ভারত বেইজিংয়ের সঙ্গে উন্নয়ন অর্থায়ন, বহুপাক্ষিক সংস্কার বা ডলারবিহীন লেনদেনের মতো ইস্যুতে ঘনিষ্ঠ হয়, তাহলে ওয়াশিংটনের বর্ণিত চীনের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ঐক্য দুর্বল হবে।
তবে তিনি মনে করেন, সরবরাহ চেইন, প্রযুক্তি, জলবায়ু সহযোগিতা ও সামুদ্রিক নিরাপত্তার মতো ইস্যুতে কোয়াডের গুরুত্ব বজায় থাকবে।
ভারত তার সরবরাহ চেইনকে বহুমুখী করার চেষ্টা করছে, যাতে করে চীনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা না থাকে। কিন্তু ট্রাম্প শুল্কের ধাক্কায় সেই কৌশলও চাপের মুখে। বিশ্লেষক হাশমির মতে, সম্পর্কের বরফ গললেও প্রতিযোগিতা ও সংঘাত অব্যাহত থাকবে। বিশ্ব বাণিজ্যে চীনের প্রভাব কমবে না; বরং দেশগুলো আবারও বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করছে।
ভারত-চীনের সম্পর্কের নতুন উষ্ণতা শুধু দুই দেশের সীমান্ত বা বাণিজ্যেই প্রভাব ফেলবে না, বরং পুরো এশিয়ার শক্তির ভারসাম্য পাল্টে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কনীতি ও কৌশলগত চাপ হয়তো উল্টোদিকে ফল দিচ্ছে, দিল্লি ও বেইজিংকে কাছাকাছি নিয়ে আসছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এই ‘ড্রাগন–হাতির নৃত্য’ কি কেবল অস্থায়ী কৌশল, নাকি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে সত্যিই দুর্বল করে দেবে?