Dhaka ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কাম্য

সিলেটে পাথর লুট

  • সম্পাদকীয়
  • আপডেটের সময়: ০২:৫২:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫
  • ৮২ নিউজ ভিউ

সিলেটের খনিজসম্পদ রক্ষণাবেক্ষণে দেশের খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) শতভাগ দায়িত্বে থাকলেও তাতে ব্যর্থ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। রোববার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ, সেখানকার লুটেরাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে অতীতে বিএমডি বরং ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী ভূমিকা পালন করেছে। অভিযোগ উঠেছে, ইজারায় শর্তের অভাব না থাকলেও সেসব শর্ত পালন করা হচ্ছে কিনা, প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে তা কখনো পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। বিভিন্ন সময়ে অনিয়মের অভিযোগ আদালত পর্যন্ত গড়ালেও বিএমডির গাফিলতির কারণে কখনো সুবিচার মেলেনি। ফলে ধ্বংস হয়েছে সিলেট অঞ্চলের পরিবেশ। পরিবেশবাদীদের দাবি, গত ২৫ বছরে লুটপাটে যে পরিমাণ সরকারি সম্পদের ক্ষতি হয়েছে, তার দায়ে এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির যেসব কর্মকর্তা দায়িত্বে ছিলেন তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

পরিবেশবিদ ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০০১ সাল থেকে যে শর্ত ভঙ্গের চর্চা শুরু হয়, তার জেরে নানা সময়ে সেখানকার পাথর কোয়ারিগুলো ধ্বংস এবং এ পর্যন্ত ৭৮ শ্রমিকের প্রাণহানি হয়েছে। এ কারণে ২০১৯ সালে পাথর উত্তোলনে ইজারা দেওয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে তৎকালীন সরকার বাধ্য হলেও ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর আবারও শুরু হয় লুটপাট। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এ পর্যন্ত প্রায় হাজার কোটি টাকার পাথর লুটপাট হলেও বিএমডিকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। সবশেষ সাদা পাথর লুটপাটের ঘটনায় দেশব্যাপী সমালোচনা শুরু হলে ২ হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৫ আগস্ট কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক। কিন্তু জাফলং, শাহ আরেফিন টিলায় যে ধ্বংসযজ্ঞ ও লুটপাট হয়েছে, তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

উত্থাপিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট অঞ্চলের পরিবেশ বিনষ্টের দায় যে বিএমডি এড়াতে পারে না, তা বলাই বাহুল্য। গণ-অভ্যুত্থানের পর স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতারা প্রশাসনের নাকের ডগায় যেভাবে পরিকল্পিতভাবে পাথর উত্তোলন করেছে, তাও আমাদের অবাক করেছে বৈকি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দুদলের মধ্যে শতভাগ রাজনৈতিক বিভেদ থাকলেও এই এলাকায় অবৈধ কর্মকাণ্ডে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে যে ঐক্য, তাও এক বড় প্যারাডক্স। এতেই প্রমাণ হয়, দুষ্কর্মে জড়িতদের কোনো দল-মত-দর্শন থাকতে পারে না। সিলেটে পাথর লুটের ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক, তাদের একমাত্র পরিচয়, তারা অপরাধী, দেশের সম্পদ ধ্বংসকারী দেশদ্রোহী। এদের ক্ষমা নেই। যথাযথ তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই তাদের প্রাপ্য। সরকার এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

Author

ট্যাগ :
জনপ্রিয় খবর

বড়লেখায় বিদ্যালয়ের গেট থেকে যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

.copy_right_section { display: none; }

জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কাম্য

সিলেটে পাথর লুট

আপডেটের সময়: ০২:৫২:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

সিলেটের খনিজসম্পদ রক্ষণাবেক্ষণে দেশের খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) শতভাগ দায়িত্বে থাকলেও তাতে ব্যর্থ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। রোববার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ, সেখানকার লুটেরাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে অতীতে বিএমডি বরং ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী ভূমিকা পালন করেছে। অভিযোগ উঠেছে, ইজারায় শর্তের অভাব না থাকলেও সেসব শর্ত পালন করা হচ্ছে কিনা, প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে তা কখনো পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। বিভিন্ন সময়ে অনিয়মের অভিযোগ আদালত পর্যন্ত গড়ালেও বিএমডির গাফিলতির কারণে কখনো সুবিচার মেলেনি। ফলে ধ্বংস হয়েছে সিলেট অঞ্চলের পরিবেশ। পরিবেশবাদীদের দাবি, গত ২৫ বছরে লুটপাটে যে পরিমাণ সরকারি সম্পদের ক্ষতি হয়েছে, তার দায়ে এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির যেসব কর্মকর্তা দায়িত্বে ছিলেন তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

পরিবেশবিদ ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০০১ সাল থেকে যে শর্ত ভঙ্গের চর্চা শুরু হয়, তার জেরে নানা সময়ে সেখানকার পাথর কোয়ারিগুলো ধ্বংস এবং এ পর্যন্ত ৭৮ শ্রমিকের প্রাণহানি হয়েছে। এ কারণে ২০১৯ সালে পাথর উত্তোলনে ইজারা দেওয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে তৎকালীন সরকার বাধ্য হলেও ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর আবারও শুরু হয় লুটপাট। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এ পর্যন্ত প্রায় হাজার কোটি টাকার পাথর লুটপাট হলেও বিএমডিকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। সবশেষ সাদা পাথর লুটপাটের ঘটনায় দেশব্যাপী সমালোচনা শুরু হলে ২ হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৫ আগস্ট কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক। কিন্তু জাফলং, শাহ আরেফিন টিলায় যে ধ্বংসযজ্ঞ ও লুটপাট হয়েছে, তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

উত্থাপিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট অঞ্চলের পরিবেশ বিনষ্টের দায় যে বিএমডি এড়াতে পারে না, তা বলাই বাহুল্য। গণ-অভ্যুত্থানের পর স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতারা প্রশাসনের নাকের ডগায় যেভাবে পরিকল্পিতভাবে পাথর উত্তোলন করেছে, তাও আমাদের অবাক করেছে বৈকি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দুদলের মধ্যে শতভাগ রাজনৈতিক বিভেদ থাকলেও এই এলাকায় অবৈধ কর্মকাণ্ডে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে যে ঐক্য, তাও এক বড় প্যারাডক্স। এতেই প্রমাণ হয়, দুষ্কর্মে জড়িতদের কোনো দল-মত-দর্শন থাকতে পারে না। সিলেটে পাথর লুটের ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক, তাদের একমাত্র পরিচয়, তারা অপরাধী, দেশের সম্পদ ধ্বংসকারী দেশদ্রোহী। এদের ক্ষমা নেই। যথাযথ তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই তাদের প্রাপ্য। সরকার এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

Author