Dhaka ১২:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রীমঙ্গলের ‘চা কন্যা’ ভাস্কর্য: চা-জনপদের প্রতীকে দাঁড়ানো এক শিল্পস্মারক

শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁও চা-বাগানের প্রবেশমুখে, ঢাকা-সিলেট  মহাসড়কের পাশে দাড়িয়ে আছে ২৪ ফুট উঁচু সাদা এক ভাস্কর্য-নাম ‘চা-কন্যা’। নারী চা-শ্রমিকের চা-পাতা তোলার ভঙ্গিমা ধরে রাখা এই কাজটি আজ শ্রীমঙ্গলে আসা পর্যটকদের স্বাগত চিহ্ন, আর চা-শিল্পের শ্র্রমসাধ্য ইতিহাসের দৃশ্যমান প্রতীক।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং সাতগাঁও চা-বাগান কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে ভাস্কর্যটি নির্মিত হয়; শিল্পী ছিলেন চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির সঞ্জিত রায়। কাজ শুরু ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে, ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি এর উদ্বোধন হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির ব্যয় ছিল প্রায় ১০ লাখ টাকা; অর্থায়ন করেছে সাতগাঁও চা-বাগান, উদ্যোগ নিয়েছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. মফিজুল ইসলাম।
ভাস্কর্যটি হবিগঞ্জ সীমান্ত ঘেঁষা শ্রীমঙ্গলের প্রবেশমুখে ‘মুছাই’ এলাকার পাশে, আলিয়াছড়া খাসিয়া পুঞ্জির রাস্তার সংযোগস্থলে সাতগাঁও চা-বাগানের ফটকের ঠিক কাছে। ফলে সড়কপথে শ্রীমঙ্গলে ঢুকলেই এটি চোখে পড়ে।
নারী শ্রমিকের হাতে চা-পাতা তোলার দৃশ্যকে কেন্দ্র করে ভাস্কর্য-নীচে চা-গাছের নকশা, ওপরে শ্রমজীবী নারীর মূর্তি। নিকটবর্তী সবুজ টিলা আর বাগানের পটভূমিতে শ্বেত রঙের ভাস্কর্যটি দৃষ্টিনন্দন কনট্রাস্ট তৈরি করে। নকশায় আধুনিক শিল্পরীতি ও স্থানীয় ঐতিহ্যের সংমিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়।
বাংলাদেশের চা-শিল্পের মূল নায়করা দীর্ঘদিন ধরেই শ্রমিকরা-বিশেষত নারী শ্রমিকেরা। তাদের অবদানের মর্যাদা ও স্মরণে ‘চা-কন্যা’ নির্মাণ; এটি শ্রীমঙ্গল মৌলভীবাজারের ‘চা-রাজধানী’ পরিচয়ের ভিজ্যুয়াল ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে এবং স্থানীয় পর্যটনেও তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশে বাণিজ্যিক চা-চাষ শুরু হয় ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনীছড়ায়। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে এই ইতিহাসের বয়স ১৭১ বছর-এই দীর্ঘ ইতিহাসের স্মৃতি, পরিশ্রম ও সংস্কৃতির সঙ্কেত বহন করে ‘চা-কন্যা’।
শ্রীমঙ্গল শহর থেকে সিএনজি বা বাসে ‘মুছাই’ পর্যন্ত গেলে রাস্তার ধারে ভাস্কর্যটি দেখা যায়। প্রতিদিন শত শত পর্যটক-দর্শনার্থীরা এই চা-কন্যা ভাস্কর্যটি দেখতে এসে অবাক বিস্ময়ে অবলোকন করেন আর সেলফি তুলেন।

Author

ট্যাগ :
জনপ্রিয় খবর

বড়লেখায় বিদ্যালয়ের গেট থেকে যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

.copy_right_section { display: none; }

শ্রীমঙ্গলের ‘চা কন্যা’ ভাস্কর্য: চা-জনপদের প্রতীকে দাঁড়ানো এক শিল্পস্মারক

আপডেটের সময়: ০৪:৫১:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫
শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁও চা-বাগানের প্রবেশমুখে, ঢাকা-সিলেট  মহাসড়কের পাশে দাড়িয়ে আছে ২৪ ফুট উঁচু সাদা এক ভাস্কর্য-নাম ‘চা-কন্যা’। নারী চা-শ্রমিকের চা-পাতা তোলার ভঙ্গিমা ধরে রাখা এই কাজটি আজ শ্রীমঙ্গলে আসা পর্যটকদের স্বাগত চিহ্ন, আর চা-শিল্পের শ্র্রমসাধ্য ইতিহাসের দৃশ্যমান প্রতীক।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং সাতগাঁও চা-বাগান কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে ভাস্কর্যটি নির্মিত হয়; শিল্পী ছিলেন চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির সঞ্জিত রায়। কাজ শুরু ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে, ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি এর উদ্বোধন হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির ব্যয় ছিল প্রায় ১০ লাখ টাকা; অর্থায়ন করেছে সাতগাঁও চা-বাগান, উদ্যোগ নিয়েছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. মফিজুল ইসলাম।
ভাস্কর্যটি হবিগঞ্জ সীমান্ত ঘেঁষা শ্রীমঙ্গলের প্রবেশমুখে ‘মুছাই’ এলাকার পাশে, আলিয়াছড়া খাসিয়া পুঞ্জির রাস্তার সংযোগস্থলে সাতগাঁও চা-বাগানের ফটকের ঠিক কাছে। ফলে সড়কপথে শ্রীমঙ্গলে ঢুকলেই এটি চোখে পড়ে।
নারী শ্রমিকের হাতে চা-পাতা তোলার দৃশ্যকে কেন্দ্র করে ভাস্কর্য-নীচে চা-গাছের নকশা, ওপরে শ্রমজীবী নারীর মূর্তি। নিকটবর্তী সবুজ টিলা আর বাগানের পটভূমিতে শ্বেত রঙের ভাস্কর্যটি দৃষ্টিনন্দন কনট্রাস্ট তৈরি করে। নকশায় আধুনিক শিল্পরীতি ও স্থানীয় ঐতিহ্যের সংমিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়।
বাংলাদেশের চা-শিল্পের মূল নায়করা দীর্ঘদিন ধরেই শ্রমিকরা-বিশেষত নারী শ্রমিকেরা। তাদের অবদানের মর্যাদা ও স্মরণে ‘চা-কন্যা’ নির্মাণ; এটি শ্রীমঙ্গল মৌলভীবাজারের ‘চা-রাজধানী’ পরিচয়ের ভিজ্যুয়াল ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে এবং স্থানীয় পর্যটনেও তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশে বাণিজ্যিক চা-চাষ শুরু হয় ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনীছড়ায়। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে এই ইতিহাসের বয়স ১৭১ বছর-এই দীর্ঘ ইতিহাসের স্মৃতি, পরিশ্রম ও সংস্কৃতির সঙ্কেত বহন করে ‘চা-কন্যা’।
শ্রীমঙ্গল শহর থেকে সিএনজি বা বাসে ‘মুছাই’ পর্যন্ত গেলে রাস্তার ধারে ভাস্কর্যটি দেখা যায়। প্রতিদিন শত শত পর্যটক-দর্শনার্থীরা এই চা-কন্যা ভাস্কর্যটি দেখতে এসে অবাক বিস্ময়ে অবলোকন করেন আর সেলফি তুলেন।

Author