Dhaka ০২:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মৌলভীবাজার শেরপুরে সরকারি জমি উচ্ছেদের পরদিনই ফের দখলে

  • আব্দুস সামাদ আজাদ
  • আপডেটের সময়: ০৩:১৪:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৮১ নিউজ ভিউ

আওয়ামী ধূসরদের দাপট, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা ধুষর গোষ্ঠী ও ব্যবসায়ী মহলে উত্তেজনা – যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের শঙ্কা

মৌলভীবাজার সদরের শেরপুর বাজারে সড়ক বিভাগের জায়গাজুড়ে বহু বছর ধরে টংঘর, টিনশেড দোকান, আধাপাকা ঘর আর দালানের সারি। সরকারি জমির ওপর গড়ে ওঠা এসব অবৈধ স্থাপনা স্থানীয়ভাবে “দখলবাজির রাজনীতি”র প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল অনেক আগেই।

অবশেষে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জেলা প্রশাসন ও সড়ক বিভাগের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হয় বড় ধরনের উচ্ছেদ অভিযান। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও শেরপুর ফাঁড়ির সদস্যদের উপস্থিতিতে একে একে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ৮৫টি স্থাপনা। দখলমুক্ত হয় প্রায় ১ একর ২০ শতাংশ সরকারি জায়গা।

অভিযান শেষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়— সরকারি জমিতে ভবিষ্যতে আর কোনো অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আকিব উল্যা জানান, “সরকারি জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। এ জমি সড়ক উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও সৌন্দর্যবর্ধনে কাজে লাগানো হবে।”

সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কাউছার হামিদ বলেন, “শেরপুর বাজারে যান চলাচল ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি হয়ে পড়েছিল। তাই উচ্ছেদই ছিল একমাত্র সমাধান।”

অভিযান চলাকালে বাজারে বিরাজ করেছিল নীরবতা। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না যেতেই আবার জমি দখলের তোড়জোড় শুরু হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের দুষর ও রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা দুষর গোষ্ঠী বুলডোজারের ফেলে যাওয়া জায়গা আবারও ঘিরে নিচ্ছেন।

ফলে সাধারণ ব্যবসায়ী, ভুক্তভোগী ও নতুন দখলদারদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র উত্তেজনা। বাজারে এখন এক অজানা আশঙ্কা ঘনীভূত— যে কোনো সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।

 

প্রশাসন যেখানে কড়াকড়ি অবস্থান নিয়ে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় উচ্ছেদ কার্যক্রম শেষ করেছে, সেখানে মাত্র একদিন পরই পুনর্দখলের ঘটনা প্রশ্ন তুলছে কার্যকারিতা নিয়ে।

স্থানীয়দের দাবি, উচ্ছেদের পর প্রশাসন যদি উদ্ধারকৃত জায়গা দ্রুত উন্নয়ন কাজে ব্যবহার না করে কিংবা নজরদারি জোরদার না করে, তবে আবারও দখল হয়ে যাবে পুরো এলাকা।

শেরপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাধারণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নয়, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা দুষর গোষ্ঠী বারবার সরকারি জায়গা দখল করে। প্রশাসন অভিযান চালালেও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ফলে ভুক্তভোগীদের ক্ষোভ আরও বাড়ছে।

 

সরকারি জায়গা দখল, উচ্ছেদ আর পুনর্দখলের এই নাটকীয়তা এখন শেরপুরের গরম আলাপ। স্থানীয়রা বলছেন, “একদিকে উন্নয়নের স্বার্থে অভিযান, অন্যদিকে রাজনৈতিক দুষরদের দাপট— শেষ পর্যন্ত জয়ী হবে কে?”

এখন সবার চোখ প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।

Author

ট্যাগ :
জনপ্রিয় খবর
.copy_right_section { display: none; }

মৌলভীবাজার শেরপুরে সরকারি জমি উচ্ছেদের পরদিনই ফের দখলে

আপডেটের সময়: ০৩:১৪:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আওয়ামী ধূসরদের দাপট, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা ধুষর গোষ্ঠী ও ব্যবসায়ী মহলে উত্তেজনা – যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের শঙ্কা

মৌলভীবাজার সদরের শেরপুর বাজারে সড়ক বিভাগের জায়গাজুড়ে বহু বছর ধরে টংঘর, টিনশেড দোকান, আধাপাকা ঘর আর দালানের সারি। সরকারি জমির ওপর গড়ে ওঠা এসব অবৈধ স্থাপনা স্থানীয়ভাবে “দখলবাজির রাজনীতি”র প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল অনেক আগেই।

অবশেষে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জেলা প্রশাসন ও সড়ক বিভাগের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হয় বড় ধরনের উচ্ছেদ অভিযান। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও শেরপুর ফাঁড়ির সদস্যদের উপস্থিতিতে একে একে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ৮৫টি স্থাপনা। দখলমুক্ত হয় প্রায় ১ একর ২০ শতাংশ সরকারি জায়গা।

অভিযান শেষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়— সরকারি জমিতে ভবিষ্যতে আর কোনো অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আকিব উল্যা জানান, “সরকারি জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। এ জমি সড়ক উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও সৌন্দর্যবর্ধনে কাজে লাগানো হবে।”

সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কাউছার হামিদ বলেন, “শেরপুর বাজারে যান চলাচল ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি হয়ে পড়েছিল। তাই উচ্ছেদই ছিল একমাত্র সমাধান।”

অভিযান চলাকালে বাজারে বিরাজ করেছিল নীরবতা। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না যেতেই আবার জমি দখলের তোড়জোড় শুরু হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের দুষর ও রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা দুষর গোষ্ঠী বুলডোজারের ফেলে যাওয়া জায়গা আবারও ঘিরে নিচ্ছেন।

ফলে সাধারণ ব্যবসায়ী, ভুক্তভোগী ও নতুন দখলদারদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র উত্তেজনা। বাজারে এখন এক অজানা আশঙ্কা ঘনীভূত— যে কোনো সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।

 

প্রশাসন যেখানে কড়াকড়ি অবস্থান নিয়ে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় উচ্ছেদ কার্যক্রম শেষ করেছে, সেখানে মাত্র একদিন পরই পুনর্দখলের ঘটনা প্রশ্ন তুলছে কার্যকারিতা নিয়ে।

স্থানীয়দের দাবি, উচ্ছেদের পর প্রশাসন যদি উদ্ধারকৃত জায়গা দ্রুত উন্নয়ন কাজে ব্যবহার না করে কিংবা নজরদারি জোরদার না করে, তবে আবারও দখল হয়ে যাবে পুরো এলাকা।

শেরপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাধারণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নয়, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা দুষর গোষ্ঠী বারবার সরকারি জায়গা দখল করে। প্রশাসন অভিযান চালালেও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ফলে ভুক্তভোগীদের ক্ষোভ আরও বাড়ছে।

 

সরকারি জায়গা দখল, উচ্ছেদ আর পুনর্দখলের এই নাটকীয়তা এখন শেরপুরের গরম আলাপ। স্থানীয়রা বলছেন, “একদিকে উন্নয়নের স্বার্থে অভিযান, অন্যদিকে রাজনৈতিক দুষরদের দাপট— শেষ পর্যন্ত জয়ী হবে কে?”

এখন সবার চোখ প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।

Author