রাজধানীর ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবারও বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়েছে। এবারও কারণ তুচ্ছ। সংঘর্ষ হয়েছে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায়। আহত হয়েছে ৪ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন। মঙ্গলবার একটি কোচিং সেন্টারে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আইডি কার্ড নিয়ে হাতাহাতির জেরে ঘটেছে সংঘর্ষ ও পালটাপালটি ধাওয়া। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ দুই পক্ষের মধ্যে পালটাপালটি ধাওয়া শুরু হয়। রাস্তায় অবস্থান নেওয়া দুই পক্ষই থেমে থেমে পরস্পরের দিকে ঢিল ছুড়তে থাকে। দুপুরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও পরে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ফের জড়ো হয়ে ঢাকা কলেজের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গেও সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ওই সড়কে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হলে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
আমরা দীর্ঘদিন থেকে লক্ষ করে আসছি, ঢাকা ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা মাঝেমধ্যে পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। অধিকাংশ সময়ই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এ দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা যেন চিরশত্রুতে পরিণত হয়েছে। কোন কলেজের শক্তি বেশি, এটা প্রমাণ করাই যেন উদ্দেশ্য। শক্তি প্রদর্শনের জন্যই চলে মহড়া এবং তাতে আহত হয় শিক্ষার্থীরা, জনজীবনে নেমে আসে দুর্ভোগ। দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের এ মনস্তত্ত্ব ব্যাখ্যা করা কঠিন। একটা শব্দ ইদানীং চালু হয়েছে-‘হ্যাডম’। হ্যাডম দেখানোই যেন শিক্ষার্থীদের একমাত্র লক্ষ্য। এ দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের এই মনস্তত্ত্বের কারণ কী, তা যেন গবেষণার বিষয়বস্তু হয়ে পড়েছে। দুই কলেজের অধ্যক্ষদ্বয় কী করছেন, আমাদের বোধগম্য নয়। তাদের উচিত ছিল শিক্ষার্থীদের জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা। তাদের শিক্ষার্থীরা এমন বেআইনি ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করলে সেই দায় তাদের ওপরই বর্তায়। আমরা জানি, দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকেই সংঘাতে জড়াচ্ছে না। কর্তৃপক্ষের উচিত, যারা নিয়মিতভাবে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়া। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদেরও অনেক কিছু করার আছে। তাদের সন্তানদের সুপথে পরিচালনা করার দায়িত্ব তাদের। সবশেষে আমরা ঢাকা ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলব, শিক্ষাজীবনে শিক্ষা গ্রহণ করাই হওয়া উচিত প্রধান ব্রত। অহেতুক বীরত্ব দেখাতে চাইলে নিজেরই ক্ষতি হতে পারে। তারা যেন বুঝতে পারে, দেশবাসী তাদের এই আচরণ পছন্দ করছে না।